রবীন্দ্রনাথ সরকার,  রংপুর প্রতিনিধিঃ

রংপুরের গংগাচড়া  উপজেলার গংগাচড়া ইউনিয়নের মোনাকোষা গ্রামের  প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেয়ে বিথী রানী   । সেখান থেকে প্রতিদিন রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, কনকনে ঠান্ডা, কুয়াশা উপেক্ষা করে বাইসাইকেল চালিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে স্কুলে উপস্থিত হতো বিথী রানী। হৃদয়ে একটাই স্বপ্ন- ভাল ফলাফল করতে হবে, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, হতদরিদ্র কৃষক পিতার কষ্ট দূর করতে হবে।

২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় গংগাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিথী রানী বিজ্ঞান  বিভাগ হতে প্রায় জিপিএ ৫  পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

এই তীব্র প্রতিযোগিতার যুগে নিজের মেধা আর অক্লান্ত পরিশ্রমকে সম্বল করে সে আজ গরীব অসহায় ঘরের মেধাবী হয়ে দাড়িয়েছে। দারিদ্র্যের তীব্র কষাঘাত বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বিথী রানীর সামনে।

এখন বিথী রানী সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে নিয়ে  পড়াশোনা শেষ করে সে ডাক্তার হতে চায়।সে সবসময়ই  মানবসেবায় নিয়োজিত রাখতে চায়।

বিথী রানীর পিতা ভ্যানচালক বিষ্ণু চন্দ্র রায় কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন  মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে চালাবেন? ভর্তি হতেও তো অনেক টাকার প্রয়োজন।  জীবনযুদ্ধে পোড়ে খাওয়া সংগ্রামী হতদরিদ্র বললেন, “আমার সর্বস্ব দিয়ে হলেও মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে চাই। ওর যদি মেধা থাকে, ইচ্ছা থাকে, এবং পরিশ্রম করতে পারে, তাহলে যত কষ্টই হোক, আমি বাকীটা গায়ের রক্ত জল করে হলেও মেয়েকে সহযোগিতা করবো।”

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা জনাবা নাহিদ তামান্না বলেন, বিথী রানীর পিতা কতটুকু পারবেন,তা জানি না। কিন্তু তার মধ্যে মেয়ের প্রতি যে সমর্থন দেখেছি, সর্বাত্মক সহযোগিতার মানসিকতা দেখেছি, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। মাত্র ১০ শতক জমিতে ফসল ফলিয়ে একজন সংগ্রামী পিতা স্বপ্ন দেখেন মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে ডাক্তার  বানানোর।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে  সর্বোচ্চ সহযোগিতা আমরা করব।